উত্তর। ভূমিকা : দাওয়াত ও জিহাদ উভয় ইসলামি জীবন বিধানের দুটি অপরিহার্য বিষয়। উভয়ের লক্ষ্যই জমিনে মহান আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়ন করা। তা সত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। আর দাওয়াত ও জিহাদের পার্থক্যই আমাদের প্রদত্ত প্রশ্নের আলােচ্য বিষয়।
দাওয়াত ও জিহাদের পার্থক্য : আভিধানিক পার্থক্য : দাওয়াহ আরবি শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে- ডাকা, আহ্বান করা, দাওয়াত দেয়া।
অপরদিকে জিহাদ ও আরবি শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে- চেষ্টা করা, সাধনা করা, সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা।
পারিভাষিক পার্থক্য : মহান আল্লাহর দ্বীন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানুষকে তাঁর দ্বীনের প্রতি আহ্বান করাকে দাওয়াহ বলে।
অপরদিকে মহান আল্লাহর দ্বীন যমীনে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা-সাধনা করাকে জিহাদ বলে।
অন্যান্য পার্থক্য : ১. ইসলামি দাওয়াহ সর্বাবস্থায় ফরজ অপরদিকে জিহাদ সময় ও অবস্থার প্রেক্ষাপটে ফরজ।
২. ইসলামি জীবনবিধান প্রতিষ্ঠায় দাওয়াতের বিষয়টি আগে আসে। আর জিহাদের বিষয়টি আসে পরে। অর্থাৎ
আগে দাওয়াতি কাজ করতে হয়। দাওয়াহ ব্যর্থ হলে করতে হয় জিহাদ।
৩. দাওয়াতের সাথে যুদ্ধের কোনাে সম্পর্ক নাই। কিন্তু জিহাদের সাথে যুদ্ধের বিষয়টি ওতপ্রােতভাবে জড়িত।
৪. দাওয়াতের ক্ষেত্রে আমিরের প্রয়ােজন হয় না। কিন্তু জিহাদে আমীর আবশ্যক।
৫. দাওয়াহ হলাে ইসলামের রক্ষাকবচ। পক্ষান্তরে জিহাদ ইসলাম ও ইসলামি রাষ্ট্র উভয়েরই রক্ষাকবচ।
৬. ইসলামের প্রথম থেকেই দাওয়াতের প্রচলন হয়েছে। কিন্তু জিহাদের প্রচলন হয়েছে পরে।
৭. দাওয়াতের মর্যাদা কম। কিন্তু জিহাদের মর্যাদা বেশি।
৮. ইসলামি দাওয়াতে ক্ষমা, উদারতা, মহানুভবতা ও উত্তম ব্যবহার জরুরি বিষয়। পক্ষান্তরে, জিহাদের মধ্যে এসব বিষয় থাকে না বললেই চলে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, দাওয়াত ও জিহাদের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও ইসলামি জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার জন্য উভয়টিই আবশ্যক। এ দুটি বিষয়কে বাদ দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই দ্বীন প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদেরকে দাওয়াত ও জিহাদে আত্মনিয়ােগ করা একান্ত কর্তব্য।